যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো বলেছেন, সাংবাদিক জামাল খাশুগজি হত্যাকাণ্ডে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত থাকতেও পারেন।
খুনের দায় আদতে যুবরাজের ওপরই বর্তায় মন্তব্য করে ট্রাম্প বলেন, “প্রিন্সই সেখানে সবকিছু পরিচালনা করছেন।”
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে ট্রাম্প বলেন, সৌদি সাংবাদিক খাশুগজি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুবরাজ বিন সালমান যে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন (নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা খাশুগজিকে হত্যা করেছে) তাই বিশ্বাস করতে চেয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু আসলে উপর পর্যায়ে যিনি থাকেন দায় তার ওপরই বর্তায়, বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “হ্যাঁ, যুবরাজই সেখানে কাজ চালাচ্ছেন। তাই এ পর্যায়ে তিনিই সবকিছু পরিচালনায় আছেন। এ কারণে যদি কাউকে দায়ী করতে হয়, তাহলে সেটি তিনিই হবেন।”
ট্রাম্পের এ মন্তব্যে খাশুগজি হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিশ্বে তোলপাড়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ সৌদি আরবের উপর চাপ আরো বাড়ল। রিয়াদে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের উপস্থিতির কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প এমন মন্তব্য করলেন। ওই সম্মেলনে গত ২ অক্টোবরে খাশুগজি হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রিন্স সালমান কথা বলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে মোহাম্মদ বিন সালমান কোনো মন্তব্য করেননি।
খাশুগজি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত কয়েকজন ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ সৌদি আরবে ওই বিনিয়োগ সম্মেলন বয়কট করেছেন।
ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট খাশুগজি গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটে নিজের বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। বাগদত্তা তুরস্কের নাগরিক হাতিস চেঙ্গিসকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তিনি কনসুলেট ভবনে প্রবেশের পর আর বেরিয়ে আসেননি।
তুরস্ক সরকার শুরু থেকেই খাশুগজি নিখোঁজ কাণ্ডে সৌদি আরবের হাত আছে বলে দাবি করে এসেছে। তারা বলেছিল, খাশুগজিকে সৌদি কনসুলেটের ভেতর নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে এবং এর প্রমাণ তাদের হাতে আছে।
সৌদি আরব শুরুতে খাশুগজি কিছুক্ষণ পর কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গেছেন বলে দাবি করলেও এক পর্যায়ে তাকে কনসুলেট ভবনের ভেতর হত্যার কথা স্বীকার করে। তারা প্রথমে ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছে, কনস্যুলেটের ভেতর ধস্তাধস্তিতে খাশুগজি খুন হন।
সৌদি আরবের এ ব্যাখ্যায় আন্তর্জাতিক মহল সন্তুষ্ট না হওয়ায় সৌদি আরব এরপর আরো কয়েকবার খুনের ঘটনাটি নিয়ে তাদের বিবৃতি পাল্টেছে। শেষমেশ খাশুগজিকে ভুল করে মেরে ফেলা হয়েছে এবং ক্রাউন প্রিন্স সালমান কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছে তারা।