ফড়িং মিডিয়া – অনলাইন ডেস্ক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুখসানা পারভীনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করছেন বিভাগের ১১ জন শিক্ষক। এর আগে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ এনে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন অধ্যাপক রুখসানা পারভীন।

শিক্ষিকা রুখসানা পারভীন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করতেন বলে সংবাদ সম্মেলন দাবি করা হয়। এবিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে একটি অডিও রেকর্ড সাংবাদিকদের শুনানো হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজী ভবনের ৩২০ নম্বর কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি করেন।

সাংবাদিকদের জানানো হয়, অভিযোগকারী রুখসানা পারভীন ছাত্র-ছাত্রীদের লোভ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের দিয়ে বাসার কাজ করে নিতেন। প্রতিনিয়ত বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন ও অমার্জিত আচরণ করেন। এক শিক্ষার্থীকে শিক্ষিকা রুখসানা পারভীন হুমকি দিয়ে বলেন, পাছায় লাথি দিয়ে তোকে তিনতলা থেকে ফেলে দিব। অন্য এক শিক্ষার্থীকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, তুমি কীভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা কর, সেটা আমি দেখে নিব। অন্য এক ছাত্রকে পরীক্ষায় ফেল করার ভয়ভীতি দেখিয়ে বারবার কাজের মেয়ে সরবরাহ করতে বাধ্য করেন। এপ্রসঙ্গে একটি অডিও রেকর্ড তারা শুনান।

জানা গেছে, শিক্ষিকা রুখসানা পারভীন যে শিক্ষার্থীকে ফেল করিয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে কাজের মেয়ে সরবরাহ করে নিতেন তার নাম নাদিম মোস্তফা। তিনি বিভাগের মাস্টর্সের শিক্ষার্থী। নাদিম মোস্তফা এই প্রতিবেদককে জানান, ওই ম্যাম আমাকে নানাভাবে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করতেন। আমি রাজশাহীর স্থানীয় ছেলে। আমার বাড়ি গোদাগাড়ীতে। আমি স্থানীয় হওয়ায় ম্যাম আমার কাছ থেকে একজন কাজের মেয়ে চান। আমি একবার কাজের মেয়ে দিয়েছিলাম।

কিন্তু ম্যাম ওই কাজের মেয়ের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করতেন। তাই ওই কাজের মেয়ে ম্যামের বাসা ছেড়ে চলে যায়। ম্যামের অত্যাচারে কোনো কাজের মেয়েই তার বাসায় থাকতে পারতেন না। চতুর্থ বর্ষে ম্যামের একটি অ্যাসাইমেন্ট আমি দিতে পারিনি। ফাইনাল পরীক্ষার আগে বিষয়টি ম্যামকে জানালে তিনি আবারও একজন কাজের মেয়ে চান। কাজের মেয়ে সরবরাহ করে দিতে পারলে তিনি আমাকে অ্যাসাইমেন্টের মার্কস দিতে চান। কিন্ত আমি অপারগতা প্রকাশ করায় তিনি আমাকে ফেল করিয়ে দেয়ার হুমকি দেন।

তবে এসব বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক রুখসানা পারভীন বলেন, নাদিমকে আমি অনেক সময় নানাভাবে সাহায্য করেছি। সে দ্বিতীয়বর্ষে থাকাকালীন একবার এক মোটরসাইকেল চুরি করেছিল। তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছলো। আমি সেই ঘটনায় তাকে পুলিশের হাত থেকে তাকে রক্ষা করেছিলাম। তারপর থেকেই তার সঙ্গে আমার ভাল সম্পর্ক হয়। তার বাড়ি গোদাগাড়ীতে হওয়ায় আমি একজন কাজের মেয়ে তার কাছ থেকে চেয়েছিলাম। এছাড়া আর অন্য কিছু আমি করিনি বা বলিনি।

এবিষয়ে নাদিম বলেন, আমি কোনো মোটরসাইকেল চুরি করিনি। একবার আমার সঙ্গে লাইসেন্স না থাকার কারণে মোটরসাইকেলসহ পুলিশের কাছে আমি ধরা পড়েছিলাম। সেই ঘটনা থেকে ম্যাম আমাকে রক্ষা করেন। এরপর থেকেই আমার কাছে বিভিন্ন সময় কাজের মেয়ে দাবি করতেন বলে অভিযোগ করেন নাদিম।