ফড়িং মিডিয়া – অনলাইন ডেস্ক: রংপুরে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে তার স্থির ও ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রংপুর নগরের কলেজপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। আটককৃতর নাম নুর মোহাম্মদ (২৩)। তার বাড়ি নীলফামারী। সে নীলফামারীর একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা করেছেন। বুধবার দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রংপুর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার লিখিত বক্তব্যে জানান, আসামি নুর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, একটি পেনড্রাইভ, চারটি সীমকার্ড, তিনটি মেমোরি কার্ড জব্দ করা হয়। জব্দকৃত আলামতের মধ্যে পেনড্রাইভ ও মেমোরি কার্ডে ধর্ষণের ভিডিও ও স্থিরচিত্র পাওয়া গেছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাসে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন নুর মোহাম্মদ।

ওই ছাত্রী রংপুর শহরে একটি স্কুলে পড়াকালে নুর মোহাম্মদের সঙ্গে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রংপুরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে সে। তখন মোবাইল ফোনে ধর্ষণের চিত্র ধারণ করে নূর মোহাম্মদ। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটির ওপর বিভিন্ন রকম মানসিক নির্যাতন করতে থাকে নুর মোহাম্মদ। বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করে।

দিনের পর দিন নির্যাতন সয়ে এক পর্যায়ে মেয়েটি বেঁকে বসলে নূর মোহাম্মদ মেয়েটির কিছু অশ্লীল ছবি তার পরিচিতদের ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠায়। এমন এক অবস্থায় মেয়েটি আবাসিক মেসে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে ঘটনার শিকার মেয়েটির পক্ষে আবাসিক মেসের শিক্ষার্থীরা পিবিআইকে জানায়।

গত ৮ আগস্ট মেয়েটি বাদী হয়ে রংপুর কোতোয়ালী থানায় নারী নির্যাতন ও দমন আইনের ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি ধারায় মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই নূর মোহাম্মদকে পুলিশ রংপুরের কলেজপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে। সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মজিদ আলী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আসামি নূর মোহাম্মদের কাছ থেকে ঘটনা সংশ্লিষ্ট সকল আলামত জব্দ করা হয়েছে। নূর মোহাম্মদ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান তিনি।