abortionফড়িং মিডিয়া – স্বাস্থ্য ডেস্ক: একটু অসাবধনতা, আর তাতেই নষ্ঠ হচ্ছে একটি প্রাণ। কিন্তু যাকে এই পৃথিবীর আলো দেখতে দেওয়া হল না তাঁর কথা না হয় বাদ দিলাম। কিন্তু যার শরীর থেকে বার করে নেওয়া হচ্ছে একটি প্রাণ তিনি কতটা সুরক্ষিত। গর্ভপাতের নানা খুটিনাখুটি রইল এবার নন্দিনীর পাতায়।  জানাচ্ছেন বিশিষ্ট স্ত্রী রোগ ডঃ ভাস্কর পাল…..

গর্ভাশয়ের ভ্রূণটি ডিম্বানু নিষেকের পর থেকে পরবর্তী ২০ সপ্তাহের মধ্যে যে কোন সময়ে প্রসবের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে যাবার নামই গর্ভপাত বা Abortion। বর্তমানে বিশ্বে অধিকাংশ গর্ভপাতই হয় ইচ্ছাকৃত ভাবে ভ্রুন নষ্ট করার কারনে। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে, অনেক সময় মায়ের সন্তানটি ধারন করার ইচ্ছা থাকলেও নিজে থেকেই গর্ভপাত (Miscarriage) হয়ে যেতে পারে৷ আবার মায়ের স্বাস্থ্য রক্ষা বা শিশুটিকে চরম ঝুঁকির হাত থেকে বাঁচাতেও বৈধভাবে গর্ভপাত (Therapeutic abortion) করানো যেতে পারে ৷

স্ত্রী রোগ ডঃ ভাস্কর পালের কথায়, আইনত ২০ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত করানো গেলেও ১২ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত নিরাপদ ৷ তবে নয় সপ্তাহ পর্যন্ত ঔষুধের দ্বারাই গর্ভপাত করানো সম্ভব বলে মনে করছেন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞরা ৷ কিন্তু ১২ সপ্তাহের পর গর্ভপাত করানোর সিদ্ধান্ত নিলে অবশ্যই দুজন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জরুরী ৷ ২০ সপ্তাহের পর গর্ভপাত করানো বেআইনি কারণ এই সময় শিশুর সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গের গঠন শেষ হয়ে যায়, তাই এসময়ে ইচ্ছাকৃত গর্ভপাত ঘটানোকে সাধারনত শিশু হত্যার সঙ্গে তুলনা করা হয় ৷ এমনকি মায়ের স্বাস্হ্যের পক্ষেও এটা নিরাপদ নয় ৷

কি কি সমস্যা হতে পারে?

১ শরীরে ইনফেকশন

২ জরায়ু বাদ দিতে হতে পারে

৩ মৃত্যুও ঘটতে পারে ৷

MTP(Medical Termination Of Pregnancy) laws & rules of 1971-এ বলা হয়েছে, গর্ভপাত করানোর সময় ৩টি বিষয়ে নজর রাখতে হবে ৷

১. কে করছেন? অর্থাৎ একজন অভিজ্ঞ স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞেরই শুধু মাত্র অনুমতি আছে গর্ভপাত করানোর।

২. কোথায় করছেন? আসল কথা, হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসালয় মানেই সেখানে গর্ভপাত করানো যাবে, এমনটা মোটেও নয়। এরজন্য উপযুক্ত পরিকাঠামোর দরকার। তাই যে সমস্ত হাসপাতালে গর্ভপাতের ব্যবস্থা আছে সেখানেই অ্যাবরশন করানো উচিৎ।

৩.কখন করবেন? প্রেগন্যান্সির পাঁচ মাসের মধ্যে আপনি সুক্ষিত গর্ভপাত করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন ২০ সপ্তাহ পরে অ্যাবরশন যেমন মায়ের জন্য ক্ষতিকারক তেমনই বেইআনিও।

এছাড়া রয়েছে গর্ভপাতের কিছু নিয়ম:

প্রথমত, অ্যাবরশনের ক্ষেত্রে স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীরও লিখিত সম্মতি প্রয়োজন৷

দ্বিতীয়ত, মায়ের শারীরিক অসুস্থতার জন্য যদি অ্যাবরশন করাতে হয় সেক্ষেত্রে কমপক্ষে দুই জন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ লিখিত অনুমতির প্রয়োজন আছে ৷ এছাড়া যদি মায়ের জীবনসংশয়ের সম্ভাবনা থাকে তাহলে অবশ্যই সার্জেন বা অন্য কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গর্ভপাত করানো উচিত নয় ৷

সূত্র : নন্দিনী – কলকাতা24×7