ফড়িং মিডিয়া – অনলাইন ডেস্ক: খুলনার পাইকগাছায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে এ্যানেসথেসিয়া ডাক্তারসহ ৫জন ডাক্তারের বদলীর কারণে গর্ভবতী মায়েদের সিরাজিয়ান সহ সকল প্রকার অপারেশন বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলায় ৩৩ জন ডাক্তারের স্থলে টিএইচএ সহ রয়েছে মাত্র ৫জন। যা দিয়ে চলছে ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের কার্যক্রম।

এছাড়া কপিলমুনির ১০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্স, ৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, ১টি সাব-সেন্টার ও ৪ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয় এমনকি এমএলএসএস না থাকায় অচল অবস্থা বিরাজ করছে।

সংশি¬ষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে ১৯৯৭ সালে ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। কিন্তু ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের কার্যক্রম। উপজেলার প্রায় ৪ লাখ জনগোষ্ঠিসহ অন্যান্য উপজেলা থেকে এ স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে চিকিৎসা নিতে আসে অসংখ্য সারধারণ রোগী।

প্রতিদিন বহির্বিভাগে ২/৩শ রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকে। আন্তঃ বিভাগে কখনও কখনও শতাধিক রোগী ছাড়িয়ে যায়। ভর্তি থাকে ৭০/৮০ জন। বেড ছাড়া যাদের ঠাই হয় বারান্দায়। ১৯৯৯ সালে পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে সিজারিয়ান কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৫ সালে চালু হয় ইউওসি প্রজেক্ট। সেবার গুনগত মান উন্নত ও কয়েক বছর মাতৃত্ব সেবায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করায় ২০০৭ সালে এ স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের ডিএসএফ কার্যক্রম চালু হয়।

গাইনী ওয়ার্ডে প্রায় সব সময় ২০/২৫ জন রোগী ভর্তি থাকে। দীর্ঘদিন ধরে এ্যানেসথেসিয়া সহ ৯জন ডাক্তার হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি সিজারিয়ান সহ বিভিন্ন ধরণের অপারেশন করে আসছে। চলতি মাসে একজন এ্যানেসথেসিয়া ডাক্তারসহ ৫ জন ডাক্তার অন্যত্রে বদলী হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সসহ উপজেলার উন্নয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি অচল অবস্থা দেখা দিয়েছে।

এছাড়া কপিলমুনি ১০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ডাক্তার, ওয়ার্ডবয়, এমএলএসএস কোনটিই নেই। প্রতিদিন একজন স্যাকমো (সহকারি ডাক্তার) যেয়ে কোনো মতে সেবা দিয়ে আসছেন। এছাড়া একটি সাব-সেন্টার, ৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ কেন্দ্র, ৪টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তারসহ কোন জনবল নেই বলে জানা গেলে। ফলে সেখানে তালা ঝুলছে বলে জানা গেছে। মাঝে মধ্যে ২/১ টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সহকারি ডাক্তার বা স্বাস্থ্য সেবার সাথে জড়িত কেউ কেউ কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে যেনতেন সেবা দিয়ে আসছেন।

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে একটি এক্স-রে ও একটি ইসিজি মেশিন টেকনিশিয়ানের অভাবে যুগ যুগ ধরে অকেজো পড়ে আছে। টিকিট মাস্টার আইয়ুব আলী সরদার বলেন, রোগীর সংখ্যা কয়েকদিনের মধ্যে অর্ধেকে নেমে আসছে। রোগীদের কাছে ‘ডাক্তার নেই কেন?’ এর জবাব দিতে হিমশিম খাচ্ছি। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডাঃ প্রভাত কুমার দাশ বলেন, মাত্র ৪জন ডাক্তার দিয়ে এতবড় হাসপাতাল সহ উপজেলার এতগুলো স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা দেয়া সম্ভব নয়।

এছাড়া এ্যানেসথেসিয়া না থাকায় গর্ভবতী মায়েদের সিজারিয়ান সহ অন্যান্য অপারেশন বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডঃ শেখ মোঃ নুরুল হক বলেন, বিষয়টি আমি অবহিত হয়েছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।