ফড়িং মিডিয়া – অনলাইন ডেস্ক: কানাডাভিত্তিক তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের যৌথ চুক্তি অবৈধ ঘোষণা করে কোম্পানিটির সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক এম শামসুল আলমের করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, নাইকোর সঙ্গে ২০০৩ সালে বাপেক্স এবং ২০০৬ সালের পেট্রোবাংলা গ্যাস বিক্রি ও বিপণন সংক্রান্ত পৃথক চুক্তি করে।

এসব চুক্তির অধীনে নাইকোর সব সম্পত্তি ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য সম্পত্তি বাংলাদেশ সরকারের অনুকূলে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া গ্যাস কুপের বিস্ফোরণে ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত নাইকোকে কোনও প্রকার পেমেন্ট করা যাবে না বলেও রায় দিয়েছেন আদালত।

আদালতের রিট আবেদেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম একং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। নাইকো সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক শালিসি আদালতে লড়া বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মঈন গণি।

মঈন গণি জানান, ২০১৬ সালে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম একটি রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনে বলা হয়, ২০০৩ ও ২০০৬ সালে নাইকোর সঙ্গে বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার চুক্তি সঠিকভাবে হয়নি। এছাড়া ২০০৫ সালে ছাতকে যে বিস্ফোরণ ঘটেছে এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশে থাকা নাইকোর সব সম্পত্তি জব্দের জন্যও আবেদন করা হয়। এরপর আদালত ২০১৬ সালের ৯ মে রুল জারি করেন।ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ রায় দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, কানাডাভিত্তিক আন্তর্জাতিক কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে ২০০৩ সালে করা বাপেক্সের চুক্তি ও ২০০৬ সালের পেট্রোবাংলার সঙ্গে কোম্পানিটির গ্যাস সংক্রান্ত চুক্তি অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুই চুক্তির অধীনে যে সব সম্পত্তি আছে, তা বাংলাদেশ সরকারের অনুকূলে ফেরত এবং নাইকো বাংলাদেশের সম্পত্তি ও বক্ল-৯ (টারলো) এর যে সম্পত্তি সেটাও ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে বাংলাদেশে গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহের কাজ পায় কানাডাভিত্তিক কোম্পানি নাইকো। এ সময় তারা পেট্রোবাংলার সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ ও কেনাবেচার চুক্তি করে, আর বাপেক্সের সঙ্গে করে একটি যৌথ উদ্যোগের চুক্তি। চুক্তি মোতাবেক ফেনী গ্যাসক্ষেত্র থেকে নাইকো গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ করে। কিন্তু সুনামগঞ্জের ছাতকের টেংরাটিলায় কূপ খনন করতে গিয়ে কোম্পানিটি দুবার বিস্ফোরণ ঘটায়। বিস্ফোরণের পর থেকে বাংলাদেশ নাইকোর কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে আসছে।