ফড়িং মিডিয়া – অনলাইন ডেস্ক: প্রথমেই জেনে রাখুন, নারী চিরকালের খুঁতখুঁতে। সে আপনি শাড়ির দোকানে গেলেই বুঝতে পারবেন। এ ব্যাপারে ব্যতিক্রম খুঁজে পাওয়া মুশকিল। শাড়ি, গয়না, খাবার, বেড়ানোর জায়গা – সবকিছু নিয়েই খুঁতখুঁতে নারী। সবেরই ভালোলাগা ও মন্দলাগার তালিকা আছে। ঠিক তেমনই তালিকা আছে পুরুষ পছন্দের ক্ষেত্রেও। – এটা চাই, সেটা চাই! তাকে ওমুকটা জানতে হবে, তমুকটা করলে বাতিল।
ফলত, না-হ্যাঁ মিলিয়ে স্বপ্নের পুরুষের যে গুণাবলি বেরিয়ে আসে, তা একমাত্র কুমারটুলিতে অর্ডার দিলেই মিলতে পারে। বাস্তব দুনিয়ায় নারীর মনের মতো পুরুষ প্রায় নেই। আর থাকলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ফলত, না-হ্যাঁ নিয়ে কাটাকুটি খেলতে খেলতে যাঁরা প্রথমেই বাদ পড়ে যান, সেই সংখ্যাটা চোখে পড়ার মতো। শুরুতেই মোট ৭ ধরনের পুরুষকে নাকচ করে দেয় নারী। প্রেম তো দূর, প্রথমেই মুখ ঘুরিয়ে নেয়। নারীমনে জায়গা পেতে হলে, তাদের নাকচের তালিকাটাও দেখে নেওয়া প্রয়োজন। কু-অভ্যেস ত্যাগ করা প্রয়োজন। নইলে তাদের মনে এ জন্মে ঠাঁই নেই!
নারীবিদ্বেষী
সামনে-পিছনে, যেভাবেই হোক, নারীবিদ্বেষী আচরণ কিংবা মন্তব্য করা ছাড়তে হবে। না হলে নাকচের তালিকায় নাম উঠবে। নারীবিদ্বেষী বলতে নারীজাতি সম্পর্কে কটুকথা, নারীর মতাদর্শকে ছোটো করা, কিংবা তাঁদের দ্বিতীয় ও দুর্বল লিঙ্গ হিসেবে মনে করা। এসবই নারী বিদ্বেষী হওয়ার লক্ষণ। এবং এধরনের বিদ্বেষ পোষণকারী পুরুষকে একেবারেই পছন্দ করে না কোনও নারী।
করণীয় : সত্যি বলতে কী, জন্ম থেকে কোনও পুরুষই নারীবিদ্বেষী হয় না। ছোটোবেলায় তাদের সবচেয়ে কাছের মানুষ মা, যিনি একজন নারী। ফলত, খুব ছোটো বয়সে নারীকে খাটো করতে শেখে না পুরুষ। অবশ্য বিদ্বেষের বয়সও সেটা নয়। শেখার ও বোঝায় সময়টা শুরু হয় ৭-৮ বছর থেকে। চোখের সামনে বাড়ির মেয়েকে খাটো করা। ছেলে হিসেবে বাড়তি লাভ। বাড়তি ছুট। এসবই কচি মনটাকে বিষিয়ে দেয়। ছোটো থেকেই নারীবিদ্বেষী করে তোলে। কারোর মধ্যে প্রভাব কম, কারোর বেশি। মোদ্দা কথা, প্রভাব একটা আছেই।
যাদের মধ্যে প্রভাব কম, তাদের মধ্যে বহিঃপ্রকাশও কম। যাদের প্রভাব বেশি, তাদের কথাবার্তায়, আচার-আচরণেও ফুটে ওঠে বিদ্বেষ। ফলত, মহিলাদের চোখেও সহজেই সেটা ধরা পড়ে। এহেন সমস্যা থেকে যদি সত্যি বেরোতে চান, সমঝে চলুন কিছু বিষয়।
প্রথমেই নারীকে খাটো করা ছাড়ুন। এটা এক ধরনের কু-শিক্ষা। কোনও সুস্থতার লক্ষণ নয়। দেশ ও বিদেশের তামাম সফল মহিলাদের দেখুন। বুঝবেন, তাঁরা কোনও অংশে কম নন। পুরুষকে টেক্কা দেন অনেকেই। আগামীদিনেও তাঁরা সফল হবেন। ফলত, নারী মনে কিঞ্চিৎ জায়গা পেতে নারীকে সম্মান করাই হোক প্রথম পদক্ষেপ।
অতিরিক্ত নীতিবোধ
সকলের চোখে অত্যন্ত নীতিপরায়ণ হলেও, নারীর বিচারে নাকচ হয়ে যেতে পারে এমন পুরুষ। তার কারণ, উঠতে-বসতে ন্যায়-নীতির বাণী শুনতে পছন্দ করেন না কোনও নারী। বিশেষ করে সেটি যদি তার নিজের সম্পর্কে হয়।
করণীয় : নীতিবান হওয়া মন্দ নয়। কিন্তু কোনও নারীকে মোহিত করতে হলে অতিরিক্ত নীতিবানভাব দেখানোও ঠিক নয়। অন্তত প্রথম প্রথম স্বরূপটাকে চেপে রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
খালি তর্ক আর তর্ক
এই শ্রেণির পুরুষদের একেবারেই পছন্দ করে না নারীজাতি। এ ধরনের পুরুষ প্রত্যেক আড্ডাকেই যুক্তি ও তক্কোর পর্যায় নিয়ে চলে যায়। ফলে এদের সঙ্গে সুমধুর কথোপকথনে মহিলারা আনন্দ পান না। আরেক মুশকিল, এধরনের পুরুষ মন দিয়ে কারও কথা শোনে না। নিজেকে জাহির করতেই এরা মরিয়া।
করণীয় : প্রথমেই শান্ত হয়ে যান। কম কথা বলা অভ্যেস করুন। নিজের জ্ঞান জাহির না করে, নারীর বুদ্ধি পরখ করুন চুপ থেকে। তিনি কী বলছেন, মন দিয়ে শোনার চেষ্টা করুন। সবশেষে নিজের মত প্রকাশ করলেও করতে পারেন।
চিপ
পুরুষ যেমন সহজলভ্য মহিলাদের ভালো চোখে দেখে না। মহিলারাও কিন্তু তাই। চিপ (পড়ুন : অগভীর) পুরুষকে একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। কী করে বোঝা যায় কোন পুরুষ চিপ – যে রাস্তার মাঝখানে শিস দেন। নিজের চেয়ে দুর্বল মানুষের সঙ্গে বিশ্রী ব্যবহার করে। গালাগালি দিয়ে কথা বলে। নিম্ন মানসিকতার পরিচয় দেয়।
করণীয় : একটি পদ্ধতিতেই এই দোষ কাটানো যায়। আপামর ব্যক্তিত্বে বদল। সেইসঙ্গে মানসিকতায় অনেকবেশি উদারতা আনা প্রয়োজন।
অহংকারী
প্রচুর ইগো নিয়ে বসে থাকলে কোনওদিনই কোনও মহিলাকে মোহিত করতে পারবেন না। মহিলারা যেসব পুরুষকে অপছন্দের তালিকায় রাখেন, তার মধ্যে অন্যতম হল অহংকারী পুরুষ। এর কারণ দেখা গেছে, অহংকারী পুরুষরা ব্যবহারের দিক থেকে খুব উগ্র হন। অন্যকে ধর্তব্যের মধ্যে ধরেন না।
করণীয় : অহংকার পতনের কারণ। অহংকারের জন্য সর্বনাশ হয়েছে, এমন উদাহরণ প্রচুর আছে। তাই সবার আগে অহংকার ত্যাগ করতে হবে। ইগো ছাড়তে হবে। অন্যকে সম্মান করতে শিখতে হবে। নিজের যোগ্যতা যাই হোক, ভাবতে হবে “আমি অতি ক্ষুদ্র”। নিজেকে বিশাল কিছু না ভেবে বরং মাটির মানুষ হতে হবে। তবেই নারীমনে জায়গা মিলবে।
রহস্যহীন
মহিলারা এমন পুরুষ পছন্দ করেন না, যার মধ্যে কোনও রহস্য লুকিয়ে নেই। মোদ্দা কথা হল, বোরিং পুরুষ মহিলাদের নাপসন্দ। এর কারণ, একজন নারী পুরুষের মধ্যে একটু অগোছালো, একটু দুরন্তপনা পছন্দ করেন – যে কি না ২৪টা ঘণ্টা নিয়মের মধ্যে থাকে না, মাঝেসাঝে নিয়মের বাইরেও হাঁটে।
করণীয় : এমনটা হলে নিজের শান্ত, গুড-বয় ইমেজের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে। নিজের মধ্যে নতুন করে এনার্জি ভরতে হবে।
গায়ে পড়া
ঘ্যানরঘ্যানর করা, পিছু নেওয়া পুরুষ হল নারীর চোখের বিষ। যে পুরুষ সারাক্ষণই ফোন, মেসেজ করে বিরক্ত করে, তাকে গুরুত্ব দেয় না অধিকাংশ নারী। বরং গুরুত্ব দেয় এমন এক পুরুষকে যে আত্মবিশ্বাসী, স্বাধীন। যে পুরুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, তাকে নারী পছন্দ করে না।
করণীয় : এর কারণ সেই পুরুষ অতিমাত্রায় আবেগপ্রবণ। সেক্ষেত্রে আবেগকে বশে আনতে শিখতে হবে। নারীর সামনে দুর্বলতা দেখালেই নাকচ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তখন কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও সমস্যা থেকে বেরোনো যায় না।
সূত্র: ইনাদুইন্ডিয়া